গাজীপুরের কাতুরিয়া পদ্মবিল প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য একটি অপূর্ব গন্তব্য। শহরের কোলাহল থেকে দূরে, প্রকৃতির শান্ত পরিবেশে অবস্থিত এই বিলটি প্রায় ৪-৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। বর্ষা থেকে শীতের শুরু পর্যন্ত এখানে পদ্ম ফুলের মনোমুগ্ধকর শোভা এবং ভোরবেলায় শাপলা ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে।
বিলের দুই পাশেই পদ্ম ও শাপলার দেখা মেলে। বিলের পূর্ব দিকে লাল ও সাদা শাপলা ফোটে, আর পশ্চিম দিকে পদ্মের সৌন্দর্য বিলটিকে এক রঙিন রূপে সাজিয়ে তোলে।
ভোরবেলা সূর্যের আলো ফোটার সাথে সাথে যখন পদ্মের পাপড়ি মেলতে শুরু করে, তখন পুরো বিল এক স্বপ্নরাজ্যে পরিণত হয়। শাপলা ফুল ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত তার পূর্ণ রূপে ফুটে থাকে, যা দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। পদ্মের সৌন্দর্য অবশ্য সারাদিনই উপভোগ করা যায়।
শহুরে ব্যস্ত জীবন থেকে দূরে, এই বিলের নীরবতা, পদ্ম ও শাপলার স্নিগ্ধতা এবং নৌকায় ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আপনাকে এক অনন্য প্রশান্তি দেবে।
কীভাবে যাবেন
জয়দেবপুর রেলগেট থেকে মোশারফ টাওয়ার এবং মোশারফ টাওয়ার থেকে সিএনজিতে নরুন বাজার পৌঁছানো যায়। নরুন বাজার থেকে অটোরিকশা রিজার্ভ নিয়ে কাতুরিয়া ব্রিজে যেতে পারবেন, ভাড়া ৪০-৫০ টাকা। কাতুরিয়া ব্রিজের পাশেই পদ্মবিল অবস্থিত। কাপাসিয়া ও শ্রীপুর থেকে আসলে নলগাও বাজার অথবা বলখেলা বাজার হয়ে সহজেই কাতুরিয়া বিল।
নৌকা ভ্রমণ
বিলে ঘোরার জন্য ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা ভাড়া পাওয়া যায়। এক ঘণ্টার জন্য নৌকা ভাড়া ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে হতে পারে। তবে নৌকাগুলোর ধারণক্ষমতা সীমিত, তাই একসাথে বেশি পর্যটক ভ্রমণ করতে পারেন না। নৌকা নিয়ে বিলের চারপাশ ঘুরে পদ্ম ও শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করা এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
আগস্ট থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত পদ্মফুল ফোটা শুরু হয় এবং এই সময়ই কাতুরিয়া পদ্মবিল ভ্রমণের সেরা সময়। পদ্ম ও শাপলা ফুলের পরিপূর্ণ সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে খুব ভোরে রওনা দেওয়া উচিত।
কাতুরিয়া পদ্মবিল কেবল একটি প্রাকৃতিক স্থান নয়, এটি একটি মানসিক প্রশান্তির কেন্দ্র। তাই যদি শহুরে জীবনের কোলাহল থেকে একটু বিরতি নিয়ে প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যেতে চান, তাহলে কাতুরিয়া পদ্মবিল আপনার জন্য একটি আদর্শ গন্তব্য হতে পারে।
0 মন্তব্যসমূহ